Robotics (রোবটিকস)

0


রোবটিকস (Robotics)


টেকনোলজির যে শাখায় রোবটের নকশা, গঠন ও কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হয় সেই শাখাকে রোবটিকস বলা হয়। এছাড়াও এই শাখায় রোবট নিয়ন্ত্রণে কম্পিউটার সিস্টেম, রোবটের সেনসরি ফিডব্যাক এবং ইনফরমেশন প্রসেসিং সম্পর্কে আলোচনা করা হয়। 'Robotics' (রোবটিকস) শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে 'robot' (রোবট) শব্দ থেকে। কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত যে মেশিন মানুষের মত কাজ করতে পারে তাকে বলা হয় রোবট। New Collegiate ডিকশনারি মতে, "রোবট হচ্ছে কম্পিউটার নিয়ন্ত্রিত একটি স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থা; যা মানুষ যেভাবে কাজ করে তা সেভাবে কাজ করতে পারে অথবা এর কাজের ধরন দেখে মনে হবে এর কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা আছে।'


রোবটে কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তার প্রয়োগ করা হয়। কম্পিউটার রোবটের সকল কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করে। সকল রোবটের কাজের ধারা পূর্ব থেকে ঠিক করে দেওয়া থাকে। রোবট শুধুমাত্র তাকে নির্দেশিত কাজের ধারা অনুযায়ী সাড়া দিয়ে থাকে। প্রত্যেকটি কাজের জন্য আলাদা আলাদা ভাবে নির্দেশনা রোবটের মেমরিতে তৈরি করে দিতে হয়। রোবট অত্যন্ত দ্রুত, ক্লান্তিহীন ও নিখুঁত কর্মক্ষম একটি যন্ত্র। এটা একটি স্বনিয়ন্ত্রিত কম্পিউটার পদ্ধতি। রোবটের সাহায্যে যে কোন প্রতিকূল পরিবেশে কাজ করা এবং শিল্প-কারখানায় উৎপাদন স্বয়ংক্রিয় করা যায়। তবে রোবট যে নিদের্শনা অনুযায়ী কাজ করে তা তৈরি করা ব্যয়বহুল ও শ্রমসাধ্য ব্যাপার। প্রত্যেকটি নতুন কাজ রোবট দ্বারা করার


জন্য যে নিদের্শনা তৈরি করতে হয়, তাতে হাজার হাজার কম্পিউটার প্রোগ্রাম কোড ব্যবহার করতে হয়। বিজ্ঞানীরা এ নিদের্শনা কীভাবে সহজ করা যায় এবং কীভাবে বেশি পরিমাণ কাজের নিদের্শনা দেওয়া যায় তা নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছেন। জাপানের মুরাতা কোম্পানির "মুরাতা বয়", সনি কর্পোরেশনের "আইবো", হোন্ডা কোম্পানির "আসিমো" ইত্যাদি রোবট প্রায় মানুষের মতই বিশেষ কোন কাজ করতে পারে।


একটি সাধারণ রোবটে নিচের উপাদান বা অংশগুলো থাকে। যথা-


পাওয়ার সিস্টেম: সাধারণত লেড এসিড ব্যাটারী দিয়ে রোবটের পাওয়ার দেওয়া হয়। এই ব্যাটারী রিচার্জেবল অর্থাৎ এতে পুনরায় চার্জ করা যায়। তাই কাজ করার


পূবে রোবটকে চার্জ দেওয়া হবে।


অ্যাকচুয়েটর (Actuator) রোবটের হাত-পা অথবা বিশেষ ভাবে তৈরি কোন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের নড়াচড়া করার জন্য কতগুলো বৈদ্যুতিক মটরের সম্বন্বয়ে তৈরি বিশেষ ব্যবস্থা হলো অ্যাকচুয়েটর। একে রোবটের হাত ও পায়ের পেশী বলেও অভিহিত করা যায়।


অনুভূতি (Sensing): অনুভূতি মানুষের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। সেন্সরের মাধ্যমে


চিত্র-১.৬: রোবট


রোবটেও মানুষের মত অনুভূতি তৈরি করা হয়। কাজেই অনুভূতি রোবটের একটি বিশেষ উপাদান। রোবটের হাত বা পা কোন একটি জায়গায় স্পর্শ করলে সেই জায়গা সম্পর্কে যাবতীয় তথ্য নেওয়ার ক্ষমতা থাকবে। মানুষের চোখের ন্যায় রোবটের ক্যামেরা দিয়ে সামনের পা পিছনের দৃশ্য নেওয়া হয়।


কাজের প্রয়োজনে রোবটকে ৩৬০° কোণে ঘুরানো যেতে পারে।


ম্যনিপিউলেশন বা পরিবর্তন করা (Manipulation): রোবটের আশেপাশের বস্তুগুলোর অবস্থান পরিবর্তন বা বস্তুটি পরিবর্তন করার পদ্ধতিকে বলা হয় ম্যনিপিউলেশন। সাধারণত রোবটের হাত-পা এই পরিবর্তনের যাবতীয় কাজ করে থাকে। রোবটের হাতে কতগুলো আঙ্গুল থাকবে যা নড়াচড়া করে কোন বস্তু ধরতে পারবে। পায়ের সাহায্যে সামনে- পিছনে বা ডানে-বামে চলাচল করতে পারবে।


রোবটিক্স এর গুরুত্ব-


• বিভিন্ন শিল্প কারখানায় জিনিসপত্র উঠানামা ও স্থাপনের জন্য রোবট কাজে লাগানো যায়।


• কলকারখানায় জিনিসপত্র সংযোজন, প্যাকিং এবং জিনিসপত্র


•পরিবহনের জন্য রোবটের ব্যবহার ফলপ্রসু।


•যুদ্ধক্ষেত্রে যুদ্ধযানে ড্রাইভারের বিকল্প হিসেবে রোবটকে ব্যবহার করা যায়। এই সমস্ত রোবট দূর নিয়ন্ত্রিত (Remote Controlled) হওয়ায় যে কোনো মুহূর্তে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।



যে সব ক্ষেত্রে অতি সূক্ষ কাজ করা দরকার হয় যেমন ইলেকট্রনিক্স এর IC গুলো বানানোর জন্য এবং PCB (Printed circuit Board) বানানোর জন্য রোবট ব্যবহৃত হয়। এক্ষেত্রে হাতে তৈরি জিনিস সঠিক নাও হতে পারে। যেমন-কম্পিউটারের মাদারবোর্ডসহ অন্যান্য সার্কিট বোর্ড তৈরিতে রোবট ব্যবহৃত হয়।


চিকিৎসা ক্ষেত্রে সার্জারীর কাজে রোবট সফলভাবে ব্যবহার করা সম্ভব হয়েছে।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)