Number System (সংখ্যা পদ্ধতি)

0


সংখ্যা পদ্ধতি (Number System)


বিশেষ কিছু চিহ্ন বা অঙ্ক বিন্যস্ত (প্রকাশ করার পদ্ধতি) করে যে পদ্ধতিতে গণনা করা হয় তাকে সংখ্যা পদ্ধতি বলে। সহজভাবে বলা যায় সংখ্যা গণনা করার পদ্ধতিকে সংখ্যা পদ্ধতি বলে। বিভিন্ন প্রকার সংখ্যা পদ্ধতি রয়েছে। যেমন: দশমিক (ডেসিমাল), বাইনারি, অক্টাল ও হেক্সাডেসিমাল। কম্পিউটার সিস্টেমে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির গুরুত্বই বেশি তবে অন্যান্য সংখ্যা পদ্ধতি পরোক্ষভাবে হলেও ব্যবহৃত হয়।


সংখ্যা পদ্ধতির প্রকারভেদ (Classification of Number System) 

সংখ্যা পদ্ধতিকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা যায়।


১। অস্থানিক সংখ্যা পদ্ধতি (Non Positional Number System)।

২। স্থানিক সংখ্যা পদ্ধতি (Positional Number System)।


১। অস্থানিক সংখ্যা পদ্ধতি: 

এই পদ্ধতিতে প্রতিটি চিহ্ন বা অংকের কোনো-স্থানিক মান নেই। এটি পূর্বে ব্যবহার করা হতো। বর্তমানে এটির প্রচলন নেই বললেই চলে। যেমন: রোমান, মেয়্যান, ট্যালি ও হায়ারোগ্লিফিক্স সংখ্যা পদ্ধতি।


২। স্থানিক সংখ্যা পদ্ধতি: 

বহুল প্রচলিত সংখ্যা পদ্ধতি হলো স্থানিক সংখ্যা পদ্ধতি। এ পদ্ধতিতে প্রতিটি চিহ্নের একটি নির্দিষ্ট স্থানিক মান রয়েছে যা নির্ভর করে অঙ্কটি কোন পদ্ধতিতে লেখা হয়েছে তার ওপর। এ ধরনের সংখ্যা পদ্ধতি চার ধরনের। যেমন- বাইনারি (Binary) বা দ্বিমিক, অক্টাল (Octal) বা অষ্টমিক, ডেসিমাল (Decimal) বা দশমিক এবং হেক্সাডেসিমাল (Hexadecimal) বা ষোড়শ। যেকোনো সংখ্যা পদ্ধতির ক্ষেত্রে নিচের ৩টি বৈশিষ্ট-প্রযোজ্য। যেমন-


(১) প্রতিটি সংখ্যা পদ্ধতির একটি Base বা ভিত্তি থাকতে হবে।

(২) ব্যবহৃত প্রতিটি Digit বা অংকের স্থানিক (Local) মান থাকতে হবে। এবং

(৩) স্থানিক মানকে Power বা ঘাত মান্য দিয়ে প্রকাশ করা যাবে।


স্থানিক সংখ্যা পদ্ধতির ক্ষেত্রে র‍্যাডিক্স পয়েন্ট এর সাহায্যে একটি সংখ্যাকে দু অংশে ভাগ করা যায়। যথা পূর্ণাংশ ও ভগ্নাংশ।

সাধারণ হিসাব-নিকাশের জন্য দশমিক বা ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়। তবে কম্পিউটার সিস্টেমের অভ্যন্তরীণ বিভিন্ন হিসাব নিকাশ সম্পন্ন হয় বাইনারি পদ্ধতিতে। কারণ কম্পিউটার তার অভ্যন্তরীণ কাজে বিট (০,১) ব্যবহার করে থাকে। নিচে এদের সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হলো:


বিট (Bit): কম্পিউটারে ব্যবহার্য ডেটার সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম অংশ হলো বিট। তথা একক বাইনারি মান "" অথবা "।" হলো বিট। Bit এর পূর্ণরূপ হলো Binary digit।


নিবল (Nibble): ১ বাইটের অর্ধেক তথা ৪ (চার) বিট মিলে নিবল হয়, যা সাধারণত একটি হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা দ্বারা প্রকাশ করা যায়।


বাইট (Byte): এক্ সেট বিট হলো বাইট যা কম্পিউটারে কোডিং এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত ৮ বিট মিলে ১ বাইট হয়ে থাকে।


ওয়ার্ড (Word): কম্পিউটারের স্বাভাবিক ডেটা সাইজ হলো ওয়ার্ড। এটি নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন কম্পিউটারের কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াকরণ অংশের উপর। যেমন ২ বাইট মিলে একটি ওয়ার্ড হতে পারে।


নিচে বিভিন্ন প্রকার সংখ্যা পদ্ধতি সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো-


বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি: 

বাই অর্থ ২ (দুই)। যে সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যা গণনা করার জন্য মাত্র ২ (দুই) টি অঙ্ক বা প্রতীক ব্যবহৃত হয় তাকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি বলে। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত প্রতীক বা অঙ্ক (digit) দুটি হলো 0 এবং ।। বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে প্রতিটি চিহ্নকে bit (Binary Digit এর সংক্ষিপ্ত রূপ) বলে। এটি সরলতম সংখ্যা পদ্ধতি। যেমন- (11011), (11.101)½, (101011), ইত্যাদি।


বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতির গুরুত্ব:

বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতিতে মাত্র দুটি চিহ্ন (০ ও ১) ব্যবহার করা হয় বলে একে বাইনারি বা দ্বিমিক সংখ্যা পদ্ধতি বলা হয়।

কম্পিউটার অসংখ্য ইলেকট্রনিক সার্কিটের সমন্বয়ে গঠিত একটি যন্ত্র। এই সার্কিটগুলোতে বিদ্যুতের High ভোল্টেজ ও Low ভোল্টেজের ভিত্তিতে কাজ হয়ে থাকে। High ভোল্টেজকে বিট-1 এবং Low ভোল্টেজকে বিট-0 দিয়ে নির্দেশ করা হয়। তাই কম্পিউটারের অভ্যন্তরীণ ক্রিয়া-প্রক্রিয়াকে বাইনারি সংখ্যা পদ্ধতি দিয়ে সহজেই ব্যাখ্যা করা যায়। কোনো সংখ্যার সবচেয়ে ডানে অবস্থিত বিটটিকে সবচেয়ে কম গুরুত্বপূর্ণ বিট বা LSB (Least Significant Bit বলা হয় এবং সর্ববামে অবস্থিত বিটটিকে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ বিট বা MSB (Most Significant Bit) বলা হয়।


অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিঃ 

অক্টা অর্থ ৮ (আট)। যে সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যা গণনা করার জন্য ৮ (আট) টি অঙ্ক বা প্রতীক ব্যবহার করা হয় তাকে অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। অক্টাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত প্রতীক বা অঙ্ক (ডিজিট) গুলো হলো 1. 1. 2, 3, 4, 5, 6 এবং 7। যেমন- (246), (17.64), (7051), ইত্যাদি।


ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি: 

ডেসি অর্থ ১০ (দশ)। যে সংখ্যা পদ্ধতিতে সংখ্যা গণনা করার জন্য ১০ (দশ) টি অঙ্ক বা প্রতীক ব্যবহার করা হয় তাকে ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। মানুষ সাধারণত গণনার কাজে ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। প্রচলিত রয়েছে মানুষের ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি ব্যবহার করার কারণ হলো মানুষের দুই হাতের মোট আঙ্গুলের সংখ্যা ১০ (দশ)। ডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতিতে ব্যবহৃত প্রতীক বা অঙ্ক (ডিজিট) গুলো হলো 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7,8 এবং 9। যেমন- (497) 10 (46.89)10 (1011), ইত্যাদি।


হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি: 

হেক্সাডেসিমাল শব্দটির দুটি অংশ; একটি হলো হেক্সা (Hexa) অর্থাৎ ৬ এবং অপরটি ডেসিমাল (Decimal) অর্থ্যাৎ ১০, দুটো মিলে হলো ঘোল অর্থাৎ যে সংখ্যা পদ্ধতিতে ১৬ (ষোল) টি অঙ্ক বা প্রতীক ব্যবহৃত হয় তাকে হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতি বলে। ষোলটি অংকের জন্য দশমিকের ১০টি অঙ্ক ও ইংরেজি ৬টি বর্ণ ব্যবহৃত হয়। হেক্সাডেসিমাল সংখ্যা পদ্ধতির প্রতীকগুলো হলো 0, 1, 2, 3, 4, 5, 6, 7, 8, 9, A, B, C, D, E এবং F হেক্সাডেসিমালে A, B, C, D, E এবং F এর সমকক্ষ দশমিক মান যথাক্রমে ১০, ১১, ১২, ১৩, ১৪ ও ১৫। যেমন- (243)16 (921.FE)16 (1E70), ইত্যাদি।

Post a Comment

0Comments
Post a Comment (0)